মুখের দুর্গন্ধ দূর করবেন কিভাবে? ঘরোয়া পদ্ধতি কি?

0

মুখের দুর্গন্ধ শুধু বিব্রত নয়, অনেক সময় অপমাণিত হওয়ারও পরিবেশ সৃষ্টি করে ফেলে। তাই মুখের দুর্গন্ধ দূর করার উপায় জানা প্রয়োজন। যাদের মুখে এই সমস্যা সৃষ্টি হয়, তাদের জন্য এই বিষয়ে জানা অত্যান্ত জরুরী। শুধু মুখে নয়, নিঃশ্বাসেও দুর্গন্ধ হতে পারে। তাই দুর্গন্ধের কারণে সৃষ্ট বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে বিশেষভাবে সচেতন হতে হবে। আজকের ইনফোতে “মুখের দুর্গন্ধ দূর করবেন কিভাবে? ঘরোয়া পদ্ধতিকি?” আলোচনা করা হলো।

মুখের দুর্গন্ধ দূর করবেন কিভাবে? ঘরোয়া পদ্ধতি কি?

মুখের দুর্গন্ধ কিংবা নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ প্রায় সবারই অভিজ্ঞা রয়েছে। কারো ক্ষেত্রে সাময়িক আবার কারো কারো ক্ষেত্রে স্থায়ী হয়ে থাকে। যারা সাময়িক এ রকম সমস্যার মুখোমুখি হয়ে থাকেন সেটা হয়তো এক দুইদন দাঁত ব্রাশ না করার কারণে কিংবা বিশেষ কোন খাবার বা ঔষধ সেবনে কারণে হতে পারে।

এই সমস্যা যাদের স্থায়ী হয় অর্থাৎ যারা প্রায় সময় মুখের কিংবা নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ ভোগেন, তাদের আগে জেনে নিতে হবে মুখের দুর্গন্ধ হয় কেন?কি কি কারণে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে? কারণ জানা থাকলে সহজেই মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে পারবেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানের দিকে থেকে যে কারণগুলো দায়ী তা হচ্ছে-


** ডেন্টাল ক্যাভিটিস
** কেটোএসিডোসিস
** গাম ডিজিজ বা মাড়ির রোগ
** ব্রাঙ্কাইকটাসিস
** বাওয়েল অবস্ট্রাকশন
** ওরাল হাইজিনের দুর্বলতা
** অ্যাসপাইরেশন নিউমোনিয়া ইত্যাদি।


এই কারণগুলো সাধারণত খুব কম হয়ে থাকে কিংবা সচরাচর এগুলোর কারণে মুখে দুর্গন্ধ হয় না। কি কারণে মুখের দুর্গন্ধ হয়ে থাকে তা বিস্তারিত জানতে মুখের দুর্গন্ধের কারণ সমূহের ইনফোটি দেখুন। আজকের ইনফোতে আমরা এই দুর্গন্ধ দূর করার উপায় নিয়ে আলোচনা করবো।

 

মুখের দুর্গন্ধ দূর করার ঘরোয়া পদ্ধতি

মুখের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য আপনাকে কোন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে না। এছাড়া এটি যে খুব কঠিন কাজ তা নয়। আপনি সাধারণ এবং প্রাকৃতিক কিছু উপায় অবলম্বন করে সহজেই মুখের এই বিব্রতকর সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।


নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ দূর করার উপায় কি?

মুখের দুর্গন্ধ থেকেই মূলত নিঃশ্বাসেও দুর্গন্ধ হয়ে থাকে। এছাড়াও কিছু খাবার রয়েছে সেগুলো নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ হওয়ার জন্য দায়ী। এই খাবার গুলো এড়িয়ে মুখের দুর্গন্ধ দুর করতে হবে।

কিভাবে মুখের দুর্গন্ধ দূর করবেন তা নিচে আলোচনা করা হলো:

 

দুর্গন্ধ দূর করতে ফ্লোরাইড টুথপেষ্ট দিয়ে ব্রাশ করুন

মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে আপনার দাঁত ও মুখ প্রত্যহ পরিস্কার করা আবশ্যক। বিভিন্ন ডেন্টাল গবেষণা থেকে জানা যায় যে, মুখের দুর্গন্ধের অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে মুখ ও দাঁতে যত্নের অভাব।

মুখের অযত্ন, অবহেলায় অর্থাৎ আপনি যদি মুখের সুস্বাস্থ্য রক্ষা না করেন তাহলে মুখে কিংবা নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ হতে পারে।

মনে রাখতে হবে দৈনন্দিন খাবার শেষে দাঁতের চিপায় যে খাদ্য কণা আটকে থাকে তা মুখে ব্যাকটেরিয়া সৃষ্টি করে। আর এই ব্যাকটেরিয়াগুলো মুখের দুর্গন্ধ সৃষ্টি করার জন্য বিশেষভাবে দায়ী।

তাই এই সমস্যার সমাধানের প্রধান উপায় হচ্ছে মুখের স্বাস্থ্য সুরক্ষা। ডেন্টাল হেলথ্ কিংবা মুখের স্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রধান উপায় হলো নিয়মিত দাঁত ও মুখ পরিস্কার করা কিংবা ব্রাশ করা।

আমরা সাধারণত দাঁত ব্রাশ করার জন্য টুথপেস্ট ব্যবহার করে থাকি। তারপরও আরো অনেক উপকরণ দিয়ে ব্রাশ করা যায়। কিন্তু সেগুলোর চেয়ে টুথপেস্ট বেশি কার্যাকরী।

সুতরাং মুখের দুর্গন্ধ সারাতে প্রতিদিন ফ্লোরাইড টুথপেস্ট দিয়ে সকাল ও রাত্রে কমপক্ষে দুই মিনিট করে দাঁত ব্রাশ করুন।

 

মাঝে মাঝে নিয়মিত দাঁত ফ্লস করা প্রয়োজন

দাঁত নিয়মিত টুথপেস্ট দিয়ে ব্রাশ করার পরও দাঁতের চিপায় –চাপায় খাদ্য কণা আটকে থাকতে পারে। এগুলো মুখে ব্যাকটেরিয়া সৃষ্টি করে দুর্গন্ধ ছড়ায়। তাই মাঝে মাঝে নিয়মিতভাবে দাঁত ফ্লস করতে হবে।

মাঝে মাঝে নিয়মিত দাঁত ফ্লস করা প্রয়োজন

দাঁত ফ্লস করা অর্থ হচ্ছে দাঁতের চিপা থেকে এক ধরণের সূতা (ফ্লস) দিয়ে খাদ্য কণা বের করে নিয়ে আসা। বাজারে ঐষধের দোকানগুলোতে ফ্লস নামে এক ধরণের সূতা পাওয়া যায়। এই সূতা দিয়ে দাঁতের বিভিন্ন চিপা-চাপায় আঁটকে থাকা প্লাক পরিস্কার করা হয়।

এই সূতা বা ফ্লস সাধারণত নাইলনের হয়ে থাকে। সম্ভব হলে প্রতিদিন একবার হলেও সূতা দিয়ে দাঁত ফ্লস করুন। কেননা এগুলো পরিস্কার করতে না পাড়লে ব্যাকটেরিয়া জন্ম দিয়ে মুখের দুর্গন্ধ হতে পারে। তাই আপনার পক্ষে নিয়মিত দাঁত ফ্লাক করা সম্ভব না হলে সপ্তাহে কমপক্ষে একবার হলেও দাঁতের ফ্লস করুন।

 

নিয়মিত জিহ্বা স্ক্র্যাপিং করুন

 অনেকদিন জিহ্বা স্ক্র্যাপিং করা থেকে বিরত থাকলে জিহ্বার উপর এক ধরণের আস্তরণ পড়ে, আর এখানে জন্ম নিতে পারে ব্যাকটেরিয়া। ব্যাকটেরিয়া কিন্তু মুখের দুর্গন্ধ তৈরি করতে সময় ক্ষেপন করে না। তাই আপনাকে সচেতন থাকতে হবে।

মূলত জিহ্বার উপর পার্টিকলস রিমুভিং করাকে জিহ্বা স্ক্র্যাপিং বলা হয়। তাই মাঝে মাঝে  দাঁতের পাশাপাশি জিহ্বাও পরিস্কার করতে হবে।

বাজারে প্লাস্টিক কিংবা মেটাল দিয়ে তৈরি এক ধরণের কোলাকার টুল বা ব্রাশ পাওয়া যায়। এই টুল বা ব্রাশ দিয়ে সহজেই  জিহ্বার উপর জমে থাকা থিন লেয়ার অব ফিল্ম বা হালকা ধরণের আস্তরণ পরিস্কার করা যায়। এরফলে নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ দূর হয়ে যাবে।

জিহবা স্ক্র্যাপিং শুধু মুখে র দুর্গন্ধ দূর করবে তা নয়, এটি খাদ্য গ্রহণের স্বাদও বহওগুণ বাড়িয়ে দিবে। এরফলে খাবারে আপনার রুচি হবে আকর্ষণীয় এবং মন থাকবে উৎফুল্ল।

 

ফলমূল ও শাক-সবজি খাবার তালিকায় রাখুন

আপনাকে খাবার তালিকায় প্রচুর পরিমানে ফলমূল ও শাক-সবজি রাখতে হবে। এটি আপনার মুখের নিঃশ্বাসকে তাজা, সতেজ ও দুর্গন্ধমুক্ত করবে। মুখের দুর্গন্ধ দূর করার এটি একটি প্রাকৃতিক উপায়।

সকালে খাবার হিসাবে এগুলো খাওয়া যেতে পারে। বিভিন্ন ধরণের ফলমূল ও শাক-সবজি আপনার মুখের ভিতরটা সর্বদা ভাল রাখতে ভূমিকা পালন করবে। অর্থাৎ এগুলো ন্যাচারাল টুথব্রাশ হিসেবে কাজ করে থাকে।

শুধুমাত্র খাবার মুখের ভিতরটা ভাল রাখতে ভূমিকা রাখে তা নয়। এমন কিছু খাবার রয়েছে শরীরে যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ভুমিকা রাখে। আবার কিছু খাবার গর্ভকালীন সময়ে গর্ভবতীতে মায়েদের জন্য খুবই জরুরী

ফল-মূল মুখের স্যালিভা প্রোডাকশনে অত্যান্ত ভূমিকা পালন করে এবং প্রাকৃতিকভাবে মুখ ও দাঁতের মাড়িকে জীবাণুমুক্ত রাখে। আর মুখ জীবাণুমুক্ত থাকা মানেই মুখে দুর্গন্ধ দূর হওয়া।

 

আরো জানুন:

খেঁজুর কেন এত উপকারী এবং নকল খেঁজুর ও আসল খেজুর কিভাবে চিনবেন?

তরমুজের পুষ্টি বেশি তবে খাওয়াতে বিপদ হয় কেন?

যে সব বীজ আপনার স্বাস্থ্যের েজন্য উপকারী তা খাবেন কিভাবে?

ছাতুর শরবত কেন খাবেন?


প্রচুর পরিমানে পানি পান করুন

কথিত আছে পানির অপর নাম জীবন। সবকিছুরই প্রাণ হচ্ছে পানি। দন্ত বিষেজ্ঞরা জানায় যে, পানির অভাবে জিহবা বা মুখ শুকয়ে যাওয়া থেকে নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ দেখা দিতে পারে। অবশ্য আমাদের মুখে সেলিভা নামক এক ধরণের পদার্থ থাকে যা মুখকে শকিয়ে যেতে দেয় না, সর্বদা মুখকে তরল বা ভেজা রাখার চেষ্টা করে। কিন্তু কোন কারণে যদি এই সেলিভার অভাবের কারণে মুখ শুকিয়ে যায় তাহলে ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধে।

মুখের সেলিভা পদার্থের যেন কোন রকম ঘাটতি না দেখা যায় সেজন্য প্রচুর পরিমানে পানি পান করা প্রয়োজন। কেননা এই অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে পারে পানি। বিশেষ করে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ও ঘুম থেকে উঠে নিয়মিতভাবে পানি পান করা উচিত।

সাধারণত আমরা যখন ঘুম যাই, তখন প্রাকৃতিকভাবেই আমাদের জিহবা শুকনো থাকে আর ঘুম থেকে উঠলে গলাও শুকিয়ে যায়। তাই প্রচুর পরিমানে পানি পান হতে পারে মুখের শুস্কতা দূর করে সেলিভা উৎপাদনের মাধ্যমে দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি পাওয়ার প্রাকৃতিক উপায়।

 

মাউথ ওয়াশ দিয়ে মুখ পরিস্কার করলে মুখের দুর্গন্ধ দূর হবে

মাউথ ওয়াশ দিয়ে নিয়মিতভাবে মুখ পরিস্কার করলে আপনার মুখের দুর্গন্ধ থাকবে না। মাউথওয়াশ শুধু দুর্গন্ধ দূর করবে তা নয়, একই সাথে ব্যাকটেরিয়ার উৎপাদনও বন্ধ করে দিবে।

মাউথ ওয়াশ দিয়ে মুখ পরিস্কার করলে মুখে মিন্টি টেস্ট তৈরি হবে যা আপনার নিঃশ্বাসকে একদম ফ্রেশ করে দিবে। এছাড়াও মুখের ভিতর বিভন্ন পাইরিয়া থেকে রক্ষা করবে এটি।

বাজারে ঔষধের দোকানগুলোতে বিভিন্ন ধরণে মাউথওয়াশ পাওয়া যায়। তবে মাউথ ওয়াশ ক্রয় করার সময় নিশ্চিত হবেন যেন এটি সর্বাধিক জীবাণু ধ্বংশ করতে পারে।

প্রতিদিন অন্তত একবার মাউথ ওয়াশ দিয়ে মুখ পরিস্কার করুন। আর যদি আপনার মুখের দুর্গন্ধ সিরিয়াস না থাকে তাহলে সপ্তাহে একবার মাউথ ওয়াশ দিয়ে মুখ পরিস্কার করলেই হবে।

 

 যে সকল খাবার নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে সেগুলো পরিহার করুন

এমন কিছু খাবার রয়েছে যা নিঃশ্বাসে মারাত্বক দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে। যেমন- পেঁয়াজ, রসুন ইত্যাদি। অনেক সময় দাঁত ব্রাশ করার পরও এদের দুর্গন্ধ যায় না।

এজাতীয় খাবারের গন্ধ সাধারণত রক্তের মাধ্যমে পুরো শরীরেই ছড়িয়ে পড়ে এবং একসময় ফুসফুসে জমা হয়। শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার সময় নিঃশ্বাসের মাধ্যমে আবার বের হয়ে আসে। এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে সব থেকে ভাল উপায় হচ্ছে এসব খাবার কাঁচায় না খাওয়া।

একান্তই যদি এই খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হয় তাহলে কোন খাবারের সাথে মিশিয়ে খাবেন। যেমন-ঝাঁলমুড়ি, চানুচুর ইত্যাদি। তবে এসব খাবার খেয়ে বাসা থেকে বের হবেন না। অর্থাৎ এসব খাবার খেয়ে অফিসে যাওয়া কিংবা বন্ধুদের সাথে দেখা করতে যাওয়া থেকে অবশ্যই বিরত থাকবেন। 


ধূমপান অবশ্যাই ত্যাগ করতে হবে

যারা ধূমপান করেন তারা হয়তো লোক সমাজে অনেক সময় বিব্রত অবস্থায় পড়ে যান। কেননা মুখে দুর্গন্ধের অন্যতম প্রধান একটি কারণ হচ্ছে ধুমপান করা।

এছাড়াও ধুমপান মুখের গাম দুর্বল করে দেয়, দাঁতে দাগ ফেলে এবং সর্বপরি মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে বিব্রতকর অবস্থা তৈরি করে।

আপনি যদি ফ্রেশ নিঃশ্বাস নিতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে ধূমপান ছাড়তে হবে। তবে যারা ধূমপানে অভ্যাস্থ হয়ে পড়েছেন তারা সহজেই ধূমপান ছাড়তে পারবেন না।

এজন্য আপনাকে কিছু ট্রিক অবলম্বণ করতে হবে। কিভাবে ধূমপান ত্যাগ করবেন কিংবা সহজেই ধূমপান ছাড়ার ট্রিকগুলো জানতে “ধূমপান ছাড়ার সহজ ট্রিক:কিভাবে ধূমপান ত্যাগ করবেন?” ইনফোটি দেখুন।

 

আনারসের জুস খাওয়াও উপকারী

অনেকেই বলে থাকেন মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে আনারসের জুস বেশ উপকারী একটি উপায়। যদিও এর কোন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ পাওয়া যায় নি।

অনেক ডেন্টিস্টই এটি মনে করেন যে, মুখের দুর্গন্ধ দূর করার দুর্দান্ত উপায় হলো আনারসের জুস। কেননা ব্যাড ব্রিথের দ্রুত এবং ইফেকটিভ চিকিৎসা হলো আনারসের শরবত।

আপনার মুখের দুর্গন্ধ নিয়ে যদি আপনি খুবই চিন্তিত থাকেন তাহলে প্রতিবেলা খাবারের পর আনারসের জুস খেতে পারেন কিংবা খাবারের পর আনারসের কয়েকটুকরা চিবিয়েও খাওয়া যেতে পারে।

 

টক দই খাওয়ার উপকারীতা উপভোগ করুন

মুখের দুর্গন্ধ দূর করা একটি প্রাকৃতিক সহজ উপায় হতে পারে টক দই। টক দইয়ে Lactobacillus নামক এক ধরণের উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে যা মুখের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াগুলোকে ধ্বংশ করে ফেলে।

তাই নন-ফ্যাট টক দই খেতে পারেন। শরীরের বিভিন্ন অংশে থাকা খারাপ বা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া নিধন করার জন্য টক দিই নিয়মিত খান।

টক দই যে শুধু আপনার শরীরে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলবে তা নয়। এটি আপনার নিঃশ্বাসে এক ধরণের সতেজতা আনয়ন করবে। ফলে আপনার মুখের দূর্গন্ধ দূর হয়ে যাবে।

 

চিনি জাতীয় খাবার পরিহার করুন

আপনার মুখে যদি দুর্গন্ধ থাকে তাহলে রাতে খাবারের পর চিনি জাতীয় খাবার একেবারেই খাবেন না।  মুখে থাকা খারাপ ব্যাকটেরিয়াগুলো, বিশেষ করে ক্ষতিকর যে ব্যাকটেরিয়া মুখের দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে, সেগুলো চিনি জাতীয় খাবার খুবই পছন্দ করে।

তাই আপনি যদি চিনি জাতীয় খাবার খান তাহলে এই ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াগুলো আরো শক্তিশালী হয়ে উঠবে দ্রুত এবং আপনার মুখের বারোটা বাজিয়ে ছাড়বে।

সুতরাং চিনি জাতীয় খাবার ত্যাগ করার  শ্রেয় হবে আপনার জন্য। আপনি চিনি ছাড়া চুইংগাম চিবোতে পারেন। কেননা এতে উপকার পাবেন।

কেননা আমাদের মুখের যে ন্যাচারাল ডিফেন্স ম্যাকানিজম যা দাঁতে প্লাগ এসিডের বিরুদ্ধে কাজ করে, সেই সেলিভা তৈরিতে চুইংগাম কার্যাকরী ভুমিকা রাখে।

 

 লবণ পানি ব্যবহার করে মুখ পরিস্কার

লবণ পানি দিয়ে মুখ পরিস্কার করা হতে পারে মুখের দুর্গন্ধ দূর করার একটি প্রাকৃতিক উপায়। এক গ্লাস গরম পনিতে অল্প পরিমান লবণ ভাল করে মিশিয়ে নিন।

এবার এই পানি দিয়ে গোলকার গরগর কুলি করুন। মুখের ভিতর এই পানি নিয়ে ১ থেকে ২ মিনিট নাড়াচারা করে ফেলে দিন।

এইভাবে কয়েকবার মুখ পরিস্কার করুন, যতবার পারেন লবণ পানি দিয়ে মুখ পরিস্কার করে নিতে পারেন। এভাবে আপনি ফ্রেশ নিঃশ্বাস এবং মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে পারেন।

 

ডাক্তারের পরামর্শ নিন

মুখের দুর্গন্ধ দুর করার জন্য উপরের ট্রিকগুলো যদি আপনার কোন কাজে না দেয়, তাহলে আপনাকে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

ডাক্তার আপনার মুখের ভিতর চেক করে দেখবেন যে, আপনার শরীরে কিংবা মুখে এমন কোন মেডিকেল কন্ডিশন সৃষ্টি হয়েছে কিনা যা মেডিসিন ছাড়া সরানো সম্ভব নয়।

যদি মেডিসিনের প্রয়োজন হয়, তাহলে ডাক্তার আপনাকে সেই ধরণে মেডিসিন দিয়ে দিবেন। ফলে আপনি নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ মুক্ত হতে পারবেন।

আরো জানুন:

তেজপাতা দিয়ে দাঁতে হলদে দাগ দূর করবে কিভাবে? 

পায়ের গোড়ালি ফাটা সমাধান করবেন কিভাবে?

আকর্ষণীয় ত্বক ধরে রাখবেন কিভাবে, প্রাকৃতিক উপায় কি?

ইসুবগুল ও তোকমা দানা কেন খাবেন এবং কিভাবে খাবেন?


মুখের দুর্গন্ধ দূর করবে লবঙ্গ

মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে লবঙ্গ একটি দারুন প্রাকৃতিক উপায়। তাৎক্ষণিক মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে লবঙ্গ একটি সহায়ক উপাদান।

রান্নার কাজে এই মশলাটি শুধু মুখের দুর্গন্ধ দূর করবে তা নয়, মুখের ভিতর থাকা ক্যাভিটি তৈরিতে ত্বড়িৎ সাহায্যকারী ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধও করে।

তাই প্রতিদিন অন্তত একবার হলেও মুখেল মধ্যে ১/২ টি লবঙ্গ রাখতে পারেন। মুখে লবঙ্গ দিয়ে হালকা করে চাপ দিয়ে রস আস্বাদন করুন।

লবঙ্গ মুখে দেওয়ার সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন। কোনভাবে লবঙ্গের তেল বা গুঁড়ো লবঙ্গ মুখে দিতে যাবেন না। কেননা এটি অনেক শক্তিশালী ক্রিয়াশীল উপাদান। আপনার মুখের মাড়ি জ্বালিয়ে দিতে পারে।

 

অ্যাপল সিডার ভিনেগার

অ্যাপল সিডার ভিনেগারকে বলতে পারেন একটি প্রাকৃতিক মাউথওয়াশ। পেঁয়াজ, রসুন কিংবা এজাতীয় খাবারের দ্বারা মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হলে এটি ব্যবহার করতে পারেন।

এক গ্লাস পানিতে অল্প কিছু ভিনেগার মিশিয়ে মুখের মধ্যে সুইচ করুন। এটি আপনার মুখের সজিবতা আনবে এবং সেই সাথে মুখের দুর্গন্ধও দূর করবে।

 

এক নজরে মুখের দুর্গন্ধ দূর করার উপায়

মুখের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য আপনাকে দাঁত,মুখ নিয়মিত পরিস্কার করতে হবে। উপরোক্ত উপায়গুলো অবলম্বণ করে সহজেই এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

দাঁত থাকতে দাঁতের যত্ন নিন এবং মুখেরও সঠিক পরিচর্যা জরুরী বিষয় হিসাবে মাথায় নিন। এজন্য অবশ্য কিছু কাজ করতে হবে। যেমন-

** প্রতিবার খাবারের পর দাঁত ব্রাশ করা।

** রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে দাঁত ব্রাশ করা অভ্যাসে পরিণত করা।

** প্রতি দুই/তিন মাস অন্তর টুথব্রাশ পরিবর্তন করুন।

** আপনি যদি কৃতিম দাঁত ব্যবহার করেন তাহলে তা খুলে ঘুমাতে যাবেন।

** প্রচুর পরিমানে পানি পান করুন।

** মাঝে মাঝে গরম পানি দিয়ে কুল করুন।

** নিয়মিতভাবে মাঝে মাঝে ডেন্টাল চেক-আপ করা প্রয়োজন।

 

শেষকথা:

আশাকরি এই ইনফোটি আপনার মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করবে। আপনার কাছে এটি প্রয়োজনীয় মনে হলে শেয়ার করে নিজের ওয়ালে রেখে দিন। প্রয়োজনের সময় যাতে সহজেই নিজের ওয়াল থেকেই খুজে নিতে পারেন।

যে কোন মতামত, পরামর্শ কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।যে কোন কমেন্ট আমরা গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে থাকি। ইনফোগুলো ভাল লাগলে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া সাইটে শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন।

Home BD info এর অন্যান্য ইনফো

সারোগেছি কি? আইন অনুযায়ী বাংলাদেশে মাতৃগর্ভ ভাড়া দেওয়ার নিয়ম এবং এ ব্যাপারে ইসলাম কি বলে?

নারী গর্ভবতী হয়েছে কিনা প্রথম সপ্তাহে কিভাবে জানবেন?

কোন সময় সহবাস করলে গর্ভবতী হবেন না

গর্ভবতী নারীর গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে কিভাবে জানবেন?

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Yes, got it !) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Read Our Policy
Accept !