আদালতের মাধ্যমে ওয়ারিশ সনদ পাবেন কিভাবে?

0

অনেক সময় আমাদের আদালতের মাধ্যমে ওয়ারিশ সনদ নেওয়া প্রয়োজন হয়। যেমন- মৃত ব্যক্তির অস্থাবর সম্পত্তি সাধারণত অর্থ পাওনা, ব্যাংক-বিমা, কোম্পানির শেয়ার কিংবা স্টকের বন্টনের জন্য এবং যাতে ভবিষ্যতে কোন ধরণের ঝামেলা না হয় সেই জন্য দেওয়ানী আদারতের মাধ্যমে ওয়ারিশ সনদ নেওয়ার দরকার পড়ে। তবে মনে রাখবেন আদালতের মাধ্যমে ওয়ারিশ সনদ নিতে হলে আপনাকে আগে স্থানীয় সরকার থেকে ওয়ারিশ সনদ নিতে হবে। স্থানীয় সরকার থেকে কিভাবে ওয়ারিশ সনদ নিবেন বিস্তারিত জানতে “ওয়ারিশ সদন কি? কোথায় থেকে কিভাবে এইসনদ নিতে হয়?” ইনফোটি দেখুন। এখানে আদালতের মাধ্যমে কিভাবে ওয়ারিশ সনদ নিবেন সেই বিষয়ে আলোচনা করা হলো।

আদালতের মাধ্যমে ওয়ারিশ সনদ পাবেন কিভাবে?

উত্তরাধিকার আইন, ১৯২৫ (ধারা ৩৭০-৩৮৯) দ্বারা আদালত ওয়ারিশ সনদ প্রদান করার আদেশ দিয়ে থাকেন।তাই আদালতের মাধ্যমে ওয়ারিশ সনদ নিতে হলে আপনাকে দেওয়ানী আদালতে মামলা করতে হবে। তবে এই ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যে, অস্থাবর সম্পত্তি বা ব্যাংক-বিমা যেখানে রয়েছে কিংবা মৃত ব্যাক্তি যেখানে থাকতেন সেই স্থানে মামলাটি করতে হবে।

 

ওয়ারিশ সনদের জন্য কেন মামলা করতে হয়?

মৃত ব্যাক্তির রেখে যাওয়া স্থাবর সম্পত্তি বন্টন করার ক্ষেত্রে সাধারণত ইউনিয় পরিষদ/ পৌরসভা থেকে ওয়ারিশ সনদ নিলেই হয়ে যায়। কিন্তু ব্যাংক-বিমা, কোম্পানীর শেয়ার ইত্যাদি অস্থাবর সম্পত্তি বন্টন করার ক্ষেত্রে এবং ভবিষ্যতে ঝামেলা এড়ানোর জন্য দেওয়ানী আদালতে ওয়ারিশ সনদের জন্য মামলা করতে হয়।

এখানে উল্লেখ্য যে, ব্যাংকে যদি মৃত ব্যক্তির নমিনি না দেওয়া থাকে তাহলে আদালতের মাধ্যমে এই ওয়ারিশ সনদ নিতে হবে। আর যদি নমিনি দেওয়া থাকে তাহলে ব্যাংকের দায়িত্ব মৃত ব্যক্তির টাকাটি বুঝিয়ে দেওয়া। তাখন আর এই ওয়ারিশ সনদ প্রয়োজন হয় না। তবে সেই নমিনির আবার দায়িত্ব যদি অন্য কোন উইল না থাকে তবে ব্যাক্তিগত আইন অনুসারে ব্যাংক প্রদত্ত অর্থ সঠিকভাবে উত্তরাধিকারের মাঝে বন্টন করে দেওয়া।

 

আদালতে কি কি লাগে?

অস্থাবর সম্পত্তির ওয়ারিশসূত্রে বন্টন করার নিমিত্তে আদালতের মাধ্যমে ওয়ারিশ সনদ নেওয়ার জন্য দেওয়ানী আদালতে মামলা করতে হবে। আর এই মামলায় নিচে উল্লেখিত ডকুমেন্টগুলো প্রয়োজন হবে।

** ওয়ারিশ সনদ (পৌরসাভা/ ইউনিয়ন কর্তক প্রদানকৃত)

** মৃত্যু সনদ

** যে ব্যাংকের/প্রতিষ্ঠানের কাছে অর্থ পাবেন/ ব্যাংক স্টেটমেন্ট

** ছবি

** জাতীয় পরিচয় পত্র

** হলফনামা (২০০ টাকার স্ট্যাম্পে)

 

মামলার প্রক্রিয়া

অন্যান্য মামলার মতোই এই মামালা দ্বায়ের করার পর, আদালতের মাধ্যমে সকল ওয়ারিশকে সমন প্রদান করে ডাকা হয়ে থাকে। আদালত তাদের কথা শুনে, সাক্ষ গ্রহণ করে, কাগজ-পত্র দেখে, বিচার-বিবেচনা করেন।

সবশেষে আদালত ওয়ারিশ সনদ প্রদানের আদেশ প্রদান করেন। এই আদেশটিই মূলত অস্থাবর সম্পত্তির ভাগ বাটোয়ারা ক্ষেত্রে প্রয়োজন পড়ে।

 

ওয়ারিশ সনদের জন্য কোর্ট ফি কত প্রয়েজন?

মামলার মূল্য হিসাবে আপনাকে কোর্ট ফি প্রদান করতে হবে। সাধারণত ২৫০০০/- টাকা কম হলে কোন কোর্ট ফি প্রয়োজন হয় না।

মামলাটির মূল্য যদি ২৫০০০-১০০০০০ টাকা বা তার কম মূল্য হয়ে থাকে তাহলে ১% কোর্ট ফি প্রদান করতে হবে।

এই মামলার মূল্য যদি ১০০০০০ টাকার বেশি হয়, তাহলে ২% টাকা কোর্ট ফি দিতে হবে। তবে মনে রাখবেন, উপরোক্ত হারের কোর্ট ফির সাথে ১৫% ভ্যাট যুক্ত করতে হবে।

মামলার সময়

সাধারণত এই মামলার ফাইলিং থেকে শুরু করে ৩/৪ মাস সময় লেগে যেতে পারে। তবে অন্য কোন জটিলতা থাকলে আরো বেশি সময় লাগতে পারে।


শেষকথা:

আশাকরি, আদালতের মাধ্যমে কেন এবং কিভাবে ওয়ারিশ সনদ নিতে হয়ে তা এই ইনফোটি থেকে জানতে পেরেছেন। ওয়ারিশ সনদ সম্পর্কে আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে কিংবা আপনার মতামত কমেন্ট করে আমাদের জানান। আপনাদের যে কোন কমেন্ট আমরা গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে থাকি।

আরো জানুন:

অনলাইনে যে কোন প্রত্যায়ন পত্র কিভাবে নিবেন?

এসএমএস এর মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্স এর অবস্থা জানবেন কিভাবে?

জমির যে কোন পর্চা অনলাইনে দেখবেন কিভােবে?

ব্যাংকে না গিয়ে সোনালী ব্যাংকের একাউন্ট খুলবেন কিভাবে?

যে সকল খাবার আপনার যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে যৌন জীবন চাঙ্গা রাখবে


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Yes, got it !) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Read Our Policy
Accept !